ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ে তোলার জন্য লাগসই ডিজিটাল সংযোগ ও ডিজিটাল ডিভাইস অপরিহার্য। ইন্টারনেট ও স্মার্ট ফোন শ্বাস-প্রশ্বাসের মতো। ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার ধারাবাহিকতায় ইন্টারনেট এখন মানুষের জীবনধারায় অনিবার্য একটি বিষয় হিসেবে জড়িয়ে আছে। ডিজিটাল প্রযুক্তির চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় ইন্টারনেট সাশ্রয়ী ও সহজলভ্য করার পাশাপাশি সবচেয়ে কম মূল্যে স্মার্ট ফোন সাধারণের নাগালে পৌঁছে দেয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যেই ইন্টারনেটের একদেশ একরেট চালু করেছি। দেশে উৎপাদিত মোবাইল ফোন ইতোমধ্যেই শতকরা ৯৬ ভাগ চাহিদা মেটানোর সক্ষমতা অর্জন করেছে বলে মন্ত্রী উল্লেখ করেন।
মন্ত্রী আজ ঢাকায় বাংলাদেশ ইন্টারনেট গভর্নেন্স ফোরাম (বিআইজিএফ) আয়োজিত দু’দিনব্যাপী ২য় ইয়থ ইন্টারনেট গভর্নেন্স ফোরামের ‘রিসাইলেন্ট ইন্টারনেট ফর এ শেয়ার্ড সাসটেইনঅ্যাবল এন্ড কমন ফিউচার : এক্সেস এন্ড কানেকটিভিটি, কমিউনিটি নেটওয়ার্কস, ক্যাপাসিটি ডেভেলপমেন্ট এন্ড ডিজিটাল ইনক্লিউসন শীর্ষক অধিবেশনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন। তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটি এবং বিআইজিএফ চেয়ারম্যান হাসানুল হক ইনু অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বলেন,
পৃথিবীর সবচেয়ে বড় লাইব্রেরি হচ্ছে ইন্টারনেট। কাউকে এ থেকে বঞ্চিত করা ঠিক নয়। তিনি বলেন, ইন্টারনেট ব্যবহারের খারাপ দিকও আছে আবাব খারাপ দিক থেকে রক্ষার উপায়ও আছে। সেটা থেকে ছেলে মেয়েদের সুরক্ষায় অভিভাবকদেরকেই ভূমিকা নিতে হবে। প্যারেন্টাইল গাইডেন্স ব্যবহার করে ইন্টারনেট শতভাগ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।
ডিজিটাল প্রযুক্তি বিকাশের এই অগ্রদূত
ইন্টারনেট নিরাপদ রাখতে সরকার গৃহীত বিভিন্ন উদ্যোগ তুলে ধরে বলেন, ইতোমধ্যে ২৬ হাজার পর্নসাইট ও ৬ হাজার জুয়ার সাইট আমরা বন্ধ করেছি। এটি চলমান প্রক্রিয়া। ছেলে মেয়েদের ডিজিটাল দক্ষতা সম্পন্ন মানব সম্পদ হিসেবে গড়ে তোলার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে
তিনি বলেন, ইতোমধ্যেই প্রাথমিক স্তরে বই ছাড়া ডিজিটাল কনটেন্টের মাধ্যমে আমি লেখা পড়ার ব্যবস্থা করেছি। দেশের ৮০০ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তা চালু করা হচ্ছে।
আমি রাস্তাটা দেখালাম অন্যরা তা অনুসরণ করবে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, সন্তানদের ডিজিটাল দক্ষতা অর্জনের সুযোগ না দিলে আগামী পৃথিবীতে তারা টিকে থাকার জন্য অযোগ্য হয়ে পড়বে। ডিজিটাল প্রযুক্তিতে বাংলা ভাষার উদ্ভাবক জনাব মোস্তাফা জব্বার বলেন, ইন্টারনেট ব্যবহার বাড়ার পাশাপাশি মানুষ ইন্টারনেটের উচ্চগতিও এখন প্রত্যাশা করে। এই লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ যুগান্তকারি বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করছে।
তিনি বলেন, ২০০৬
সালে দেশে প্রতি এমবিপিএস ইন্টানেটের দাম ছিলো ৭৮ হাজার টাকা, ২০০৮ সালে তা ২৭ হাজার টাকা এবং বর্তমানে তা ৬০ টাকায় নির্ধারিত হয়েছে। সে সময় দেশে মাত্র সাড়ে সাত জিবিপিএস ব্যান্ডউদথ ব্যবহৃত হতো তা বেড়ে বর্তমানে ৩৮ শত জিবিপিএস-এ উন্নীত হয়েছে বলে মন্ত্রী উল্লেখ করেন।
২০২১ সালের ১২ ডিসেম্বর বাংলাদেশ ফাইভ-জি যুগে প্রবেশ করেছে উল্লেখ করে বলেন, সামনের যুগের প্রযুক্তি হবে ফাইভ-জি। ২ জি কিছু দিন চলবে, থ্রি জি মোবাইল আমদানি ও উৎপাদন জানুয়ারি থেকে বন্ধ হয়ে যাবে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন ফোর-জি হবে কমন প্লাটফর্ম। মোবাইল কলড্রপের টাকা গ্রাহকরা ফেরৎ পাবেন বলেও মন্ত্রী এসময় উল্লেখ করেন।
হাসানুল হক ইনু বলেন, এমন কোন ক্ষেত্র নেই
যেখানে
ইন্টারনেট প্রযুক্তির প্রয়োগের প্রয়োজন হয় না। ইন্টারনেট প্রযুক্তি দেশে নতুন অর্থনীতির সুযোগ সৃষ্টি করেছে। কৃষক- শ্রমিক, প্রবাসী এবং গার্মেন্টেসের নারী কর্মীদের
বাংলাদেশের অর্থনীতির চালিকা শক্তি হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, তাদের সাথে যুক্ত হয়েছে আইটি তরুণ –তরণী। তিনি ইন্টারনেটকে মৌলিক অধিকার হিসেবে ঘোষণার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
বিএনএনআরসি’র সিইও এএইচএম বজলুর রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিটিআরসি’র ভাইস চেয়ারম্যান সুব্রত রায় মৈত্র, অ্যামটবের সাবেক মহাসচিব টিআইএম নুরুল কবির, বিআইজিএফ’র সেক্রেটারি জেনারেল মোহাম্মদ আবদুল হক অনু, ইয়থ ইন্টারনেট গভর্নেন্স ফোরামের চেয়ারপার্সন সৈয়দা কামরুন জাহান রিপা এবং কিডস ইন্টানেট গভর্নেন্স ফোরামের চেয়ারপার্সন আয়শা লাবিবা প্রমূখ বক্তৃতা করেন।
০ টি মন্তব্য