https://www.brandellaltd.com/

গেমের জগৎ

সুপার স্ট্রিট ফাইটার ৪

সুপার স্ট্রিট ফাইটার ৪ সুপার স্ট্রিট ফাইটার ৪
 

সুপার স্ট্রিট ফাইটার ৪


গেমসের দোকানে গিয়ে যারা আগে ভিড় জমাতেন এখন তাদের সেসব দোকানে আর পা মাড়াতে দেখা যায় না। দোকানের ভিড়ে গিয়ে গেম খেলবেনই বা কেনো, যদি ঘরে পিসির সামনে বসে সেই একই গেম আরামে খেলা যায়। আর্কেড গেমগুলোর বেশিরভাগ গেমই এখন ইমুলেটরের সাহায্যে পিসিতে চালানো যায়। আবার কিছু গেম আছে যা আর্কেডের পাশাপাশি পিসি ভার্সনও বের করা হয়ে থাকে। তবে মজার বিষয় হচ্ছে স্ট্রিট ফাইটার বরাবরের মতোই একটি আর্কেড গেম সিরিজ, কিন্তু নতুন গেমের ক্ষেত্রে ঘটেছে ব্যতিক্রমধর্মী ঘটনা। সুপার স্ট্রিট ফাইটার ৪ গেমটি আর্কেড মোডে না ছেড়ে প্রথমে ছাড়া হয়েছে পিসির জন্য। তার পরে বের হয়েছে এর থ্রিডি এডিশন এবং সম্প্রতি বেরিয়েছে আর্কেড এডিশন। গেমটি জাপানে সুপা সুতোরিতো ফাইতা ফো নামে পরিচিত। গেমটি যৌথভাবে ডেভেলপ করেছে ক্যাপকম ও ডিম্পস এবং পাবলিশ করেছে ক্যাপকম। গেমারদের কাছে ক্যাপকম খুবই পরিচিত নাম। কারণ ১৯৮৩ সাল থেকে জাপানের ওসাকায় অবস্থিত এ কোম্পানি কয়েকশ গেম ডেভেলপ ও পাবলিশ করেছে। তাদের শাখা ছড়িয়ে আছে উত্তর আমেরিকা, ইউরোপ ও পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন স্থানে। থ্রিডিও, অ্যামিগা, আটারি এসটি, আর্কেড, কমোডোর ৬৪, আইওএস, এমএসএক্স, পিসি, এমএস-ডস, সিপিএস চেঞ্জার, পিনবল, নিওজিও পকেট পালার, নিনটেনডো, গেমবয়, সেগা মেগা ড্রাইভ, ড্রিমকাস্ট, প্লেস্টেশন, পিএসপি, উইই, ওয়ান্ডার সোয়ান, এক্সবক্স, জেডএক্স স্পেকট্রামসহ আরো অনেক গেমিং প্লাটফর্মের জন্য গেম বানিয়েছে এ কোম্পানি। তাদের অবিস্মরণীয় আবিষ্কার হচ্ছে- স্ট্রিট ফাইটার সিরিজ, মেগাম্যান সিরিজ ও রেসিডেন্ট ইভিল সিরিজ। ক্যাপকমের নতুন এ গেমের প্রডিউসার ইয়োশিনোরি ওনো, ডিজাইনার হিরোতোশি শিওজাকি এবং আর্টিস্ট দায়গো ইকেনো। শুধু গেমই নয়, এ সিরিজ নিয়ে রয়েছে বেশ কিছু কমিকস, অ্যানিমেশন ফিল্ম, মুভি ও অ্যানিমেটেড সিরিজ। এক কথায় বলতে গেলে ডুয়াল ফাইটিং গেমগুলোর মধ্যে অন্যতম গেম হিসেবে অনেকের প্রথম পছন্দের তালিকায় রয়েছে স্ট্রিট ফাইটার সিরিজের গেমগুলো।


গেমের গ্রাফিক্স আগের গেম স্ট্রিট ফাইটার ৪-এর মতোই, তবে সামান্য কিছুটা পরিবর্তন আনা হয়েছে। গেমের ব্যাকগ্রাউন্ড তেমন একটা নতুন করা হয়নি আগের তুলনায়। গেমে প্লেয়ারের লড়াই কৌশলেও তেমন একটা পরিবর্তন চোখে পড়বে না। গেমের মূল আকর্ষণ হচ্ছে নতুন ক্যারেক্টার। এ গেমে ৩৯টি ক্যারেক্টার রাখা হয়েছে। আগের গেমের সব ক্যারেক্টারের পাশাপাশি নতুন আগত ক্যারেক্টারগুলো হচ্ছে- ইভিল রিয়ু, ওনি, ইয়ুন ও ইয়াং। ইভিল রিয়ু অরিজিনাল রিয়ুর শয়তানি রূপ, ওনির সাথে সাথে আকুমার অনেক মিল আছে এবং ইয়ুন ও ইয়াং হচ্ছে চাইনিজ মার্শাল আর্ট কুংফু জানা অ্যাডভেঞ্চারপ্রিয় দুই কিশোর। গেম সিরিজের অরিজিনাল ক্যারেক্টারগুলোর মধ্যে রয়েছে- জাপানের কারাতে পারদর্শী ও শক্তির প্রকৃত উৎসসন্ধানী রিয়ু, রিয়ুর সহপাঠী ও বন্ধু আমেরিকার ধনকুবের কেন মাস্টারস, চীনা ইন্টারপোল ডিটেকটিভ চুন-লি, জাপানের সুমো কুস্তিগির ই. হোন্ডা, রিয়ুর প্রেমে হাবুডুবু খাওয়া জাপানি স্কুলছাত্রী সাকুরা কাসুগানো, অহঙ্কারী ও আত্মভোলা কারাতে ছাত্র ড্যান হাবিকি, দুর্ধর্ষ আর্মি পারসন ও স্পাই ক্যামি হোয়াইট, মায়াজাদুবিশারদ সুন্দরী রোজ, জিনগত পরিবর্তন ঘটিয়ে জানোয়ারে রূপান্তরিত আমেরিকান আর্মি সোলজার ব্লাঙ্কা, বিশালদেহী মোটা বুদ্ধির রাশিয়ান রেসলার জানগিফ, আমেরিকান আর্মির মিক্সড মার্শাল আর্ট পারদর্শী গোয়েল, ইন্ডিয়ান সাধু ডালসিম, আফ্রিকান বক্সার বালরগ, স্পেনের বিখ্যাত কেজ ফাইটার ভেগা, থাইল্যান্ডের মুয়াই থাই ফাইটার সাগাত, চীনের মার্শাল আর্ট মুভি সুপারস্টার ফেই লং, কুংফু গ্র্যান্ডমাস্টার গেন, শ্যাডোলু নামের সন্ত্রাসী চক্রের কর্ণধার এম. বাইসন ও রহস্যময় চরিত্র আকুমা। স্ট্রিট ফাইটার ৪-এ আগত কিছু নতুন মুখের মধ্যে রয়েছে- ফ্রান্সের মিক্সড মার্শাল আর্টে দীক্ষিত অ্যামনেশিয়া রোগী (যার অতীত সম্পর্কে কিছু মনে নেই) আবেল, আমেরিকান স্পাই এজেন্ট ক্রিমসন ভাইপার নামে সুন্দরী লড়াকু নারী, কেনের প্রতিদ্বন্দ্বী বিশাল বপুর কুংফু ফাইটার রুফুস, স্পেনের পাচক বা শেফ এল ফুয়েরতে যে কিনা রেসলিং ভালোবাসে, এসআইএন নামের প্রতিষ্ঠানের চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার সেথ এবং আকুমার বড় ভাই এবং সেই সাথে রিয়ু ও কেনের গুরু গোওকেন। আরো কিছু চরিত্রের মধ্যে রয়েছে- সুপার স্ট্রিট ফাইটার ২-এর আফ্রিকান ক্যাপোয়েইরা মার্শাল আর্টে দীক্ষিত ডি জে ও রেড ইন্ডিয়ান চিফ টি. হাউক; স্ট্রিট ফাইটার অরিজিনাল গেমের সাগাতের প্রতিপক্ষ মুয়াই থাই ফাইটার অ্যাডন; ফাইনাল ফাইট সিরিজের জেল পলাতক আসামি আমেরিকান মার্শাল আর্টিস্ট কডি ও জাপানের নিনজুৎসু মার্শাল আর্টে দীক্ষিত নিনজা গাই; স্ট্রিট ফাইটার ৩-এর স্টাইলিশ বক্সার ডাডলি, নারী নিনজা ইবুকি ও কারাতে মাস্টার মাকোতো; তুর্কিসত্মানের তৈলাক্ত কুস্তিগির হাকান ও জুরি নামের দক্ষিণ কোরিয়ান তায়েকান্দো মার্শাল আর্টিস্ট জুরি এ সিরিজের নতুন মুখ।


গেমে থ্রিডি ব্যাকগ্রাউন্ড রাখা হয়েছে, কিন্তু ফাইট করতে হয় টুডি সারফেসে। একই লাইন বরাবর একে অপরের মুখোমুখি হয়ে লড়াই করতে হবে। টেক্কেনের মতো ডুয়াল ফাইটিং গেমের মতো স্থান পরিবর্তন করার কোনো সুযোগ দেয়া হয়নি এ গেমে। গেমে ফোকাস অ্যাটাক, সুপার কম্বো ও আল্ট্রা কম্বো এবং মজার ব্যাপার হচ্ছে প্রতি প্লেয়ারের জন্য দুটি আল্ট্রা কম্বো বরাদ্দ করা হয়েছে। খেলার পদ্ধতি খুবই সহজ নিজের হেলথ মিটার বাঁচিয়ে প্রতিপক্ষের হেলথ মিটারের দাগ শূন্যের কোঠায় নিয়ে যাওয়া। কোনো কারণে দুইজনের হেলথ মিটার একসাথে শেষ হলে খেলা ড্র হবে। গেমে হালকা, মাঝারি ও ভারি এ তিন ধরনের পাঞ্চ ও কিক রাখা হয়েছে। তিনটি ঘুষির বাটন একসাথে চেপে সুপার বা আল্ট্রা কম্বো মারতে হবে অথবা একটি শর্টকার্ট বাটন বানিয়ে নিয়ে শুধু এক বাটন চেপেই তিন বাটন চাপার কাজ করতে হবে। তিন ধরনের পাঞ্চ ও কিকের মাঝে সমন্বয় সাধন করে যে দক্ষতার সাথে খেলতে পারবে সেই অনায়াসে প্রতিপক্ষকে মাত দিতে পারবে। গেমে কয়েকটি মোডের দেখা মিলবে, এগুলো হচ্ছে- আর্কেড, ভার্সেস, ট্রেনিং ও ট্রায়ালস। অনলাইন মোডের মধ্যে রয়েছে টিম ব্যাটল, ইন্ডলেস ব্যাটল ও টুর্নামেন্ট। গেমের আরেকটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য হচ্ছে গেম খেলার সময় তা রেকর্ড করে রাখা যায় এবং তা পরে রিপ্লে করা যায়। গেমের গ্রাফিক্সকে কালিতে আঁকা স্কেচ স্টাইল, রঙ-তুলির আঁচড়ে আঁকা ক্যানভাস ও পোস্টারাইজেশন ইফেক্ট দেয়া যায় যদি তা হাই ডিটেইলসে খেলা হয়। গেমের গ্রাফিক্স মিডিয়াম বা হাই করে খেলে দেখতে পারলে গেমের স্বাদ আরো বেশি উপভোগ করা যাবে। মিনিমাম রিকোয়ারমেন্টের পিসি কনফিগারেশনে গেম খেলা যাবে অনায়াসে, কিন্তু গ্রাফিক্সের কারুকাজ উপভোগ করা যাবে না। তাই যাদের পিসির কনফিগারেশন রিকমেন্ডেড সিস্টেম রিকোয়ারমেন্টের সাথে মিলে যাবে তারা বেশ ভালোভাবে উপভোগ করতে পারবেন এ গেমটি।


গেমটি চালানোর মিনিমাম সিস্টেম রিকোয়ারমেন্ট হচ্ছে- ২.০ গিগাহার্টজের ইন্টেল পেন্টিয়াম ৪ বা সমমানের এএমডি প্রসেসর, ১ গিগাবাইট র্যাভম, ডিরেক্টএক্স ৯.০সি ও পিক্সেল শেডার ৩.০ সাপোর্টেড গ্রাফিক্স কার্ড ২৫৬ মেগাবাইট মেমরির (ন্যূনতম এনডিভিয়া জিফোর্স ৬৬০০ বা এটিআই রাডেওন এক্স১৬০০ গ্রাফিক্স কার্ড) এবং ৪.৫ গিগাবাইট হার্ডডিস্ক স্পেস। গেমটি চালানোর রিকমেন্ডেড সিস্টেম রিকোয়ারমেন্ট হচ্ছে- ২.০ গিগাহার্টজের ইন্টেল কোর টু ডুয়ো বা সমমানের এএমডি এক্সটু প্রসেসর, ২ গিগাবাইট র্যা.ম, ডিরেক্টএক্স ৯.০সি ও পিক্সেল শেডার ৩.০ সাপোর্টেড গ্রাফিক্স কার্ড ৫১২ মেগাবাইট মেমরির এনডিভিয়া জিফোর্স ৮৬০০ বা তদুর্ধ। গেমটি খেলার জন্য পিসিতে মাইক্রোসফটের গেমস ফর উইন্ডোজ লাইভ নামের সফটওয়্যার ইনস্টল করা থাকতে হবে। যদিও অনলাইন অ্যাকাউন্ট খুলে অনলাইনে অন্যান্য প্রতিযোগীর সাথে খেলার সুযোগ পাওয়া যাবে। ইন্টারনেট কানেকশন না থাকলে অফলাইন বা লোকাল প্রোফাইল খুলে তা খেলা যাবে। গেমটি কীবোর্ডের পাশাপাশি গেমপ্যাডে খেলার ব্যবস্থা রয়েছে। তাই দুজন একসাথে এক পিসিতে লড়াই করতে পারবেন অনায়াসে। বন্ধুদের সাথে ঘরে বসেই জমাতে পারবেন ডুয়াল ফাইটিং গেমের আসর








০ টি মন্তব্য



মতামত দিন

আপনি লগ ইন অবস্থায় নেই।
আপনার মতামতটি দেওয়ার জন্য লগ ইন করুন। যদি রেজিষ্ট্রেশন করা না থাকে প্রথমে রেজিষ্ট্রেশন করুন।







পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন? পুনরায় রিসেট করুন






রিভিউ

আপনি লগ ইন অবস্থায় নেই।
আপনার রিভিউ দেওয়ার জন্য লগ ইন করুন। যদি রেজিষ্ট্রেশন করা না থাকে প্রথমে রেজিষ্ট্রেশন করুন।