ইউরোপে আইফোন ও আইপ্যাডের জন্য গেম নির্মাতা প্রতিষ্ঠান এপিক গেমসের মার্কেটপ্লেস অ্যাপের অনুমোদন দিয়েছে টেক জায়ান্ট অ্যাপল।
অ্যাপল ডিভাইসে গেম স্টোর তৈরি প্রচেষ্টাকে বাধা দেয়ার আইনি বিরোধের মধ্যে এ সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানটি।
এপিক গেমসের মার্কেটপ্লেস অ্যাপের অনুমোদনের সিদ্ধান্তটি এপিক সুইডেন এবি মার্কেটপ্লেসের সঙ্গে সম্পর্কিত। এদিকে আইওএসের পাশাপাশি অ্যান্ড্রয়েড প্লাটফর্মের জন্য গেমস স্টোর চালুর কথাও জানিয়েছে এপিক।
এক্সে দেয়া পোস্টে জানানো হয়েছে, স্টোরটি চলতি বছরের শেষের দিকে আইওএস ও অ্যান্ড্রয়েড উভয় প্লাটফর্মে চালু করা হবে।
স্টোরটি সব অ্যাপ ডেভেলপারের জন্য ন্যায্য শর্তাবলি রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। ফলে ফোর্টনাইটের মতো নিজস্ব গেমের পাশাপাশি স্টোরটিতে অন্য ডেভেলপারের গেমগুলো ডাউনলোডের সুযোগ থাকবে।
এপিক গেমসের স্টোরটি আইওএস, অ্যান্ড্রয়েড, উইন্ডোজ এবং ম্যাকসহ প্রথম মাল্টি-প্লাটফর্ম অ্যাপ স্টোর হতে যাচ্ছে।
উইন্ডোজ ও ম্যাকের মতো এপিক গেমস স্টোর মোবাইল প্লাটফর্মগুলোয় বিক্রির ১২ শতাংশ কমিশন নেবে। এছাড়া প্রথম ছয় মাস গেম ডেভেলপারদের আলাদা কোনো ফি দিতে হবে না।
ডেভেলপাররা কোনো ধরনের ফি ছাড়াই বিনামূল্যে গেম এপিক গেমসের স্টোরে নিজেদের গেম আপলোড করার সুযোগ পাবে। এছাড়া পছন্দমতো পেমেন্ট প্রক্রিয়াও ব্যবহার করা যাবে। যার মাধ্যমে গেম বিক্রির পুরো আয় নিজের কাছে রাখতে পারবে।
এপিক গেমস আশা করছে ডেভেলপারবান্ধব এ নীতিগুলো গেম নির্মাতাদের এপিক গেমস স্টোরে তাদের গেম তালিকাভুক্ত করতে আকৃষ্ট করবে।
এর আগে এপিক গেমস জানিয়েছিল, অ্যাপল দুবার তাদের গেমস স্টোরের আবেদন প্রত্যাখ্যান করেছে। তখন কুপারটিনোর প্রযুক্তি জায়ান্টটি জানায়, এপিক স্টোরের ডিজাইনের সঙ্গে অ্যাপল স্টোরের মিল থাকায় আবেদন বাতিল করা হয়েছে।
অ্যাপলের প্রত্যাখ্যানকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ডিজিটাল মার্কেটস অ্যাক্টের লঙ্ঘন বলে অভিহিত করে এপিক। এরই সঙ্গে এপিক গেমস ইউরোপীয় কমিশনের কাছে তাদের উদ্বেগের কথা জানায়।
এর পরিপ্রেক্ষিতে সম্প্রতি ইউরোপিয়ান কমিশন বিকল্প অ্যাপ স্টোরের জন্য অ্যাপলের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে। তবে ইউরোপিয়ান কমিশন বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।
এপিক গেমস ও অ্যাপলের মধ্যে ২০২০ সাল থেকে আইনি লড়াইয়ে চলছে। এপিক গেমসের অভিযোগ মোবাইল অপারেটিং সিস্টেমের ইন-অ্যাপ পেমেন্টে ৩০ শতাংশ পর্যন্ত কমিশন নেয় অ্যাপল, যা যুক্তরাষ্ট্রের অ্যান্টিট্রাস্ট আইনের লঙ্ঘন।
অন্যদিকে এপিক গেমস জানায়, তাদের গেম স্টোর একটি মাল্টি প্লাটফর্ম অ্যাপ। এতে ফোর্টনাইটের মতো নিজস্ব গেমের পাশাপাশি অন্য ডেভেলপারের গেমস ডাউনলোড করার সুযোগ রাখবে এপিক গেমস।
চলতি বছর অনুষ্ঠিত গেম ডেভেলপার কনফারেন্সে এপিক তাদের স্টোরে আয় ভাগ করে নেয়ার মডেল তুলে ধরে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের ডিজিটাল মার্কেটস অ্যাক্টের ফলে অ্যাপল ও গুগলের মতো প্রযুক্তি কোম্পানিগুলো বড় ধরনের পরিবর্তন আনতে বাধ্য হয়েছে।
নতুন নিয়ম অনুসারে গুগল ও অ্যাপলের মোবাইল অপারেটিং সিস্টেমে থার্ড পার্টি অ্যাপ স্টোর চালানোর অনুমতি দিতে হবে। মূলত অ্যাপলের একচেটিয়া নিয়ন্ত্রণের বিরুদ্ধে এপিক গেমসের মামলার কারণে এ পরিবর্তন এসেছে।
০ টি মন্তব্য