বিশ্ব সভ্যতাকে নতুন মাত্রা দিচ্ছে চতুর্থ শিল্পবিপ্লব। এই বিপ্লবের প্রক্রিয়া ও সম্ভাব্যতা নিয়ে ইতোমধ্যে বিশ্বব্যাপী ব্যাপক আলোচনা হচ্ছে। আলোচনা হচ্ছে আমাদের দেশেও। এই আলোচনার মাধ্যমে মানুষের মধ্যে এক ধরনের সচেতনতা তৈরি বাংলাদেশকে চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের নেতৃত্ব দানের উপযোগী করে গড়ে তুলে দক্ষ জনবল তৈরির লক্ষ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এবং তার তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টা নিরলস কাজ করছেন। আমরা জানি, চতুর্থ শিল্পবিপ্লব হচ্ছে ফিউশন অব ফিজিক্যাল, ডিজিটাল এবং বায়োলজিকাল স্ফেয়ার। এখানে ফিজিক্যাল হচ্ছে হিউমেন, বায়োলজিকাল হচ্ছে প্রকৃতি এবং ডিজিটাল হচ্ছে টেকনোলজি।
এই
তিনটিকে আলাদা করা কঠিন হয়ে যাচ্ছে। এর ফলে কী হচ্ছে? সমাজে
কী ধরনের পরিবর্তন হচ্ছে? এর ফলে ইন্টেলেকচুয়ালাইজেশন হচ্ছে, হিউমেন
মেশিন ইন্টারফেস হচ্ছে এবং রিয়েলটি এবং ভার্চুয়ালিটি এক হয়ে যাচ্ছে। এখন যদি আমরা
আমাদের চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের জন্য প্রস্তুত করতে হলে ইমোশনাল ইন্টেলিজেন্সি, ফিজিক্যাল
ইন্টেলিজেন্সি, সোশ্যাল ইন্টেলিজেন্সি, কনটেস্ট ইন্টেলিজেন্সির মতো
বিষয়গুলো তাদের মাথায় প্রবেশ করিয়ে দিতে হবে। তাহলে ভবিষ্যতে আমরা সবাইকে চতুর্থ
শিল্পবিপ্লবের জন্য প্রস্তুত করতে পারব। তবে ভবিষ্যতে কী কী কাজ তৈরি হবে সেটা
অজানা। এই অজানা ভবিষ্যতের জন্য প্রজন্মকে তৈরি করতে আমরা আমাদের কয়েকটা বিষয়ে কাজ
পারি।
সভ্যতা
পরিবর্তনের শক্তিশালী উপাদান হলো তথ্য। সভ্যতার শুরু থেকেই মানুষ তার অভিজ্ঞতালব্ধ
জ্ঞান ছড়িয়ে দিতে উদগ্রীব ছিল। কাগজ ও কালির আবিষ্কার এবং পরবর্তীতে ছাপাখানার
উদ্ভব মানুষের তথ্য বিস্তারের আকাঙক্ষাকে বাস্তবে রূপায়িত করে। তবে মানুষের তথ্য
প্রসারের তীব্র বাসনাকে গতিময়তা দেয় টেলিগ্রাফ, টেলিফোন, বেতার, টেলিভিশন
এসবের আবিষ্কার। বিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝিতে কম্পিউটার ও পরবর্তীতে তারবিহীন নানা
প্রযুক্তি তথ্য সংরক্ষণ ও বিস্তারে বিপ্লবের সূচনা করে। আজকের এই ডট কমের যুগে
আক্ষরিক অর্থেই সারা বিশ্ব একটি ‘গ্লোবাল ভিলেজ’ এ
পরিণত হয়েছে। আইসিটি বা তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি তাই দিন বদলের হাতিয়ার হিসেবে বিশ্বব্যাপী
আদৃত হয়েছে। চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের প্রযুক্তিগত আলোড়ন সর্বত্র বিরাজমান।
এ
বিপ্লব চিন্তার জগতে, পণ্য উৎপাদনে ও সেবা প্রদানে বিশাল পরিবর্তন ঘটাচ্ছে। মানুষের
জীবনধারা ও পৃথিবীর গতি-প্রকৃতি ব্যাপকভাবে বদলে দিচ্ছে। জৈবিক, পার্থিব
ও ডিজিটাল জগতের মধ্যেকার পার্থক্যের দেয়ালে চির ধরিয়েছে। আর্টিফিসিয়াল
ইন্টেলিজেন্স, রোবটিক্স, ইন্টারনেট অব থিংস, ভার্চুয়াল রিয়েলিটি, থ্রিডি
প্রিন্টিং, জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং, কোয়ান্টাম কম্পিউটিং ও
অন্যান্য প্রযুক্তি মিলেই এ বিপ্লব। এ বিপ্লবের ব্যাপকতা, প্রযুক্তিনির্ভর
আধুনিকতা ও এ সংশ্লিষ্ট জটিল ব্যবস্থা বিশ্বের সরকারগুলোর সক্ষমতাকে বড় ধরনের
পরীক্ষার সম্মুখীনও করেছে। বিশেষত যখন তাবৎ সরকার টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা তথা
এসডিজির আলোকে ‘কাউকে পিছিয়ে ফেলে না রেখে’ সবাইকে নিয়ে
অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। টেকসই উন্নয়ন, বৈষম্য
হ্রাস, নিরাপদ কর্ম এবং দায়িত্বশীল ভোগ ও উৎপাদন এসডিজি বাস্তবায়ন ও
অর্জনের মূল চ্যালেঞ্জ।
বর্তমান
সময়ে একটা বাজ ওয়ার্ড হলো বিগ ডাটা, শুরুতেই একটা উদাহরণ দেখে
নেয়া যাক। কোন বিষয়ে আপনার তথ্য জানা নেই, এই সমস্যা বিগ ডাটা সলভ
করতে পারবে। শুধু সংশ্লিষ্ট বিষয়টির ছবি দিয়ে তারপর কম্পিউটার তার সাইজ ঠিকঠাক
বুঝে নিতে পারবে এই পুরো কাজগুলো করা সম্ভব হয়েছে বিগ ডাটা অ্যানালাইসিস করেভ।
বর্তমান টেক ওয়ার্ল্ডে বিগ ডাটা একটা বহুল আলোচিত শব্দ। বিগডাটা শব্দটা বেশীরভাগ
সময় আনস্ট্রাকচার্ড ডাটার ক্ষেত্রে ব্যবহার হয়। তবে স্ট্রাকচার্ড ডাটার ক্ষেত্রেও
বিগডাটার ব্যবহার পরিলক্ষিত হয়। অর্থ্যাৎ, ডেটা এমনভাবে আছে যে সরাসরি
ব্যবহার করার উপায় নাই। তখন বিভিন্ন এলগরিদম ব্যবহার করে সেই ডেটা থেকে নানা তথ্য
উপাত্ত বের করা হয়।
অ্যালগরিদমগুলো
বেশির ভাগ সময় মেশিন লার্নিং আর ন্যাচারাল ল্যাঙ্গুয়েজ প্রসেসিং এ ব্যবহার করা হয়।
কিন্তু এগুলো ছাড়াও শুধু পরিসংখ্যান, লিনিয়ার এলজেবরা, কিংবা
স্ট্রিং প্রসেসিং করেও অনেক তথ্য উপাত্ত বের করে ফেলা যায়। উল্লেখ্য মেশিন লার্নিং
প্রায় সব ডেটা সায়েন্সের ক্ষেত্রেই ব্যবহার করা হয়।
প্রত্যেক
টার্মিনোলজির কতগুলো বৈশিষ্ট্য থাকে। বিগ ডাটারও বেশ কয়েকটি বৈশিষ্ট্য রয়েছে।
মোটামুটিভাবে বিগডাটার বেসিক তিনটি বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে আলোকপাত করা হয়। যাকে তিনটি
ভি বলে আখ্যায়িত করা হয় ভলিউম, ভ্যারাইটি এন্ড ভেলোসিটি।
ভলিউম
বিগডাটার ক্ষেত্রে, আমরা ভলিউম বলতে বুঝি হিউজ পরিমাণ ডাটা। যা সাধারণত পরিমাপ করা হয়ে
থাকে জেটাবাইটস, ইয়োত্তাবাইস এক্সাবাইটস ইত্যাদি এককে। অর্থাৎ ভলিউম মানে উৎপন্ন
এবং সংরক্ষিত ডেটার পরিমাণ। তবে কোন ডেটা বিগ ডেটা হিসেবে বিবেচনা করা যাবে কি
যাবে না তা নির্ধারণ করে ডাটা সাইজ এবং ডাটা ধারণ ক্ষমতার উপর।
ভেলোসেটি: যে
গতিতে তথ্য তৈরি, তথ্য প্রক্রিয়াকরণ, তথ্য উন্নয়নের অগ্রগতি, চাহিদা
ও চ্যালেঞ্জগুলি সম্পন্ন করা হয় তাকে ভেলোসিট বলা হয়। বিগ ডাটা সাধারণত গতিময় বা
টানা সৃষ্টি হতে থাকে। সাধারণত কোম্পানিগুলো ডাটা অ্যানালাইসিস করে থাকে ব্যাচ
প্রসেসসিং প্রক্রিয়ায়। যা কিনা খুব ধীর গতিময়। কিন্তু বিগ ডাটা ফ্লোটা হচ্ছে
কন্টিনিয়াস। ফলে কোম্পানিগুলোকে এখন রিয়েল টাইম ডাটা এনালাইসিস করে তাদের বিজনেস
ডিসিশন নিতে হচ্ছে।
ভ্যারাইটি
: বিগ ডাটা প্রসেসিংয়ে যে চ্যালেঞ্জগুলোর সম্মুখীন হতে হয়
তার মধ্যে তথ্য টাইপ এবং তথ্যের প্রকৃতি অন্যতম। কারণ ডাটাগুলো বিভিন্ন ধরণের হয়ে
থাকে। সেমি-স্ট্রাকচার্ড, আন-স্ট্রাকচার্ড, অডিও, ভিডিও
, টেক্সট, লগ, ওয়েব ডাটা, এক্সএমএল, জেসন ইত্যাদি ধরনের ডাটা নিয়েই বিগ ডাটা। ডেটা সব ধরনের ফরম্যাটে
সৃষ্টি হতে পারে। তবে প্রথাগত ডেটাবেসগুলিতে সুরক্ষিত, সংখ্যাসূচক
ডেটা থেকে অনুমোদিত পাঠ্য নথি, ইমেল, ভিডিও, অডিও, স্টক
টিকার ডেটা এবং আর্থিক লেনদেনগুলিতে আসে। আর এই ডাটাগুলো অর্গানাইজ করা কিছুটা
জটিল একটা প্রসেস। কারণ ডাটাগুলো খুব দ্রুত পরিবর্তন হয়।
একটা
সময় ছিলো যখন আমরা আমাদের সবকিছুই কাগজে লিখে রাখতাম। কখন খেতে যাবো, কবে
মিটিং, কখন শপিং এ যাবো এসব টু ডু লিস্টগুলো কাগজে কিংবা ডায়েরীতে লিখে
রাখতাম। এমনকি স্যারের কাছে পড়ার লেকচার থেকে শুরু করে দুধওয়ালা কিংবা পত্রিকার
হকারের পেপার দেয়ার হিসেব।
প্রযুক্তির
অভাবনীয় উন্নয়ন আমাদের জীবন করেছে সহজ এবং স্বাচ্ছন্দ্যময়। তথ্য-আদান প্রদানের
পরিধি দিনের পর দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। সারাক্ষণ একে অন্যের কাছে বিভিন্ন তথ্য দিচ্ছি
বা অন্যের কাছ থেকে তথ্য নিচ্ছি। যেদিন থেকেই ইন্টারনেট নামক ধারনাটি আমাদের মধ্যে
বিকশিত হলো, সেদিন থেকেই এই তথ্য আদান-প্রদানের মাত্রা অবিশ্বাস্য হারে বৃদ্ধি
পাচ্ছে। আচ্ছা আমরা যদি জানার চেষ্টা করি মানবজাতির সকল সংগৃহিত ডাটার পরিমাণ
কেমন। হুবহু বলতে না পারলেও আন্দাজ করা যায় ২০০৩ সাল পর্যন্ত আমাদের জমাকৃত ডাটার
পরিমাণ প্রায় ৫ বিলিয়ন গিগাবাইট। বর্তমানে ইন্টারনেট এবং বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ার
বদৌলতে প্রতিদিন ডাটার পরিমাণ কয়েকগুণ করে বৃদ্ধি পাচ্ছে। টেকনোলজি ওয়ার্ল্ড কিভাবে
গত শতক থেকে রাতারাতি চেঞ্জ হয়ে হয়ে গেছে।
বর্তমান বিশ্বের শতকরা ৮০ ভাগ ইনফরমেশন এখন আনস্ট্রাকচার্ড।
আনস্ট্রাকচার্ড ডাটা স্ট্রাকচার্ড ডাটা থেকে প্রায়
১৫ গুণ হারে বাড়ছে।
ইনফরমেশনগুলো এক্সেস পাওয়া যেন সবার
গণতান্ত্রিক অধিকার হয়ে দাঁড়িয়েছে , মানে সবার জন্য
ইনফরমেশন গুলো এভেইল্যাবল। ২০২০ সালের মধ্যে ডাটা ক্রিয়েটিং রেট হবে ৪৪ট্রিলিয়ন গিগাবাইটস।
আর
এই বিভিন্ন ওয়েবে, সেন্সরের মাধ্যমে, পরিবেশগত এবং আমাদের দ্বারা
সৃষ্ট সব ডাটার সমষ্টিকে বলা হয় বিগ ডাটা। এই
ডাটার পরিমাণ এত বেশি যে সেগুলোকে গুটিকয়েক সাধারণ কম্পিউটার দ্বারা বিশ্লেষণ করা
অসম্ভব আংশিকভাবে সম্ভব হলেও তা বেশ কষ্টসাধ্য। এসব বিষয় নিয়ে কাজ করে থাকেন ডাটা
সায়েন্টিষ্টরা, নানান রিসার্চার, যারা এসব ডাটাকে
অ্যানালাইসিস করেন।
নাম
থেকেই বোঝা যাচ্ছে যে, এখানে বিশাল পরিমাণ তথ্য নিয়ে কাজ-কারবার। সেই বিশালতা কেমন। এটা
এমনই বিশাল যে, গতানুগতিক ডাটাবেজের পক্ষে একে ধারণ করা সম্ভব হয় না, তাছাড়া
এসব ডাটা এত দ্রুত ও বেশি পরিমানে তৈরি হচ্ছে যে আগেরকার ডাটা এনালাইসিসের
উপায়গুলো দিয়ে এসব ডাটা এনালাইসিস করা সম্ভব হয় না। দরকার হচ্ছে নতুন প্রযুক্তি, নতুন
চিন্তা। সব মিলিয়ে, যদি এমন কোন ডাটা আমরা দেখি যেটা সাধারণ পদ্ধতিতে আমাদের পক্ষে
কোথাও স্টোর বা ধারণ করে রাখা, ওই ডাটা প্রসেস করা এবং ওই
ডাটা থেকে প্রয়োজনিয় তথ্য বের করা সম্ভব না হয় তাহলেই সেই ডাটা বিগ ডাটা।
অর্থ্যাৎ, ডেটা
এমনভাবে আছে যে সরাসরি ব্যবহার করার উপায় নাই। তখন বিভিন্ন এলগরিদম ব্যবহার করে
সেই ডেটা থেকে নানা তথ্য উপাত্ত বের করা হয়। অ্যালগরিদমগুলো বেশির ভাগ সময় মেশিন
লার্নিং আর ন্যাচারাল ল্যাঙ্গুয়েজ প্রসেসিং এ
ব্যবহার করা হয়। কিন্তু এগুলো ছাড়াও শুধু পরিসংখ্যান, লিনিয়ার
এলজেবরা, কিংবা স্ট্রিং প্রসেসিং করেও অনেক তথ্য উপাত্ত বের করে ফেলা যায়।
উল্লেখ্য মেশিন লার্নিং প্রায় সব ডেটা সায়েন্সের ক্ষেত্রেই
ব্যবহার করা হয়।
তথ্যভিত্তিক
গবেষণা করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো স্কুল, সিস্টেম, ছাত্র
এবং পাঠ্যক্রমের উপর উল্লেখ্যযোগ্য প্রভাব রাখতে পারে। বিগ ডেটা ব্যবহার করে তারা
ঝুঁকিপূর্ণ ছাত্রছাত্রীদের চিহ্নিত করতে পারেন। এছাড়া ছাত্রছাত্রীদের অগ্রগতি, শিক্ষক-শিক্ষিকাদের
মূল্যায়নের মাধ্যমে শিক্ষা ব্যবস্থার পরিবর্তন এবং উন্নয়ন করাও সম্ভব।
কেমন
হবে যদি কিছুদিন পরে আপনি নানান ওয়েবসাইটে দেখতে পান যে ওরা আপনাকে নানান
স্বাস্থ্য পরীক্ষা বা খাবার দাবার এর বিষয়ে সাজেশন দিচ্ছে। অবাক হলেও এমনটাই হবে
কিছুদিনের মাঝে। আপনার খাবারের অভ্যেস, ঘুমের অভ্যেস, ডিভাইস
বা নানান ওয়েবসাইট ব্যবহারের তথ্যের উপরে ভিত্তি করে নানান সাজেশন দেয়া, আগে
থেকে রোগ সম্পর্কে ধারণা করা, এবং দ্রুত চিকিৎসা নেয়ার
জন্য বিগ ডাটা ভালো অবদান রাখবে। এর জন্য ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গেছে নানান কাজ। এছাও
খাবারের গুণগত মান, পুষ্টি, নানান রোগ সম্পর্কে গবেষণা এবং রোগীর তথ্য সংরক্ষণ ইত্যাদি কাজে
ব্যবহৃত হচ্ছে বিগ ডাটা।
আমরা
বিভিন্ন সোর্স থেকে ডাটা পেয়ে থাকি। অর্থাৎ বিভিন্ন ওয়েব, বিজনেস
কিংবা অ্যাপ্লিকেশন থেকে আমরা ডাটা পাই। কিন্তু এসবের বাইরে ও একটা টার্মিনোলজি
আছে, যা থেকে আমরা হিউজ ডাটা লাভ করে থাকি। এখনতো ট্র্যাফিক আর
স্ট্রিট কন্ডিশন ড্রাইভারের সাথে কমিউনিকেট করে যা আশেপাশের ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা, বরফ
জমা রাস্তা কিংবা রাস্তার সংস্কারের জন্য বন্ধ থাকা রাস্তাসহ সবকিছু সেন্সর
রি-রাউটিং করে ড্রাইভারকে ইনফরম করবে। কাজেই, আমাদেরকে ডাটা শর্ট করে
মনিটরিং ও ট্র্যাকিং করতে সাহায্য করছে সেন্সর। আর ক্রাইড বেইসড আর্টিফিশিয়াল
ইন্টেলিজেন্স এর মাধ্যমে ডাটাকে মেশিন কিংবা মোবাইল এ রেয়াল টাইম রেসপন্স করবে।
আমরা আশা করতেই পারি, ঢাকা সিটিকে খুব শীঘ্রই স্মার্ট সিটি হিসাবে দেখবো। এতক্ষণ, আইওটির
সাথে বিগ ডাটার কি সম্পর্ক।
বিভিন্ন
রকম ডিভাইস, মেশিন, সেন্সর, ওয়েব লগ ইত্যাদির ডাটা গুলো জেনারেট হয় আমরা সবাই জানি। এই
ডাটাগুলো অবশ্যই ম্যাসিভ ডাটা, আন-স্ট্রাকচার্ড, সেমি-স্ট্রাকচার্ড
কিংবা স্ট্রাকচার্ড এবং ডাটাগুলো বিভিন্ন ধরণের। কাজেই
আমরা বলতে পারি আইওটি থেকে প্রাপ্ত ডাটাগুলো বিগ ডাটা। আর
এই বিগ ডাটা এনালাইসিস করেই এমন রিয়েল টাইম ডিসিশন নিতে পারি আমরা। ছাড়া বিজ্ঞানের
বিভিন্ন গবেষণার ক্ষেত্রে বর্তমানে প্রচুর পরিমাণে বিগ ডাটার ব্যবহার হচ্ছে। বিশেষ
করে জীব প্রযুক্তি, ডিএনএ ডাটাবেজে, হিউমেন জিনোম, ফ্লুয়িড
ডায়নামিকস থেকে শুরু করে নাসার বিজ্ঞানীরাও বিগ ডাটা ব্যবহার করছে। অন্যদিকে খেলার
মাঠেও বিগ ডাটা পিছিয়ে নেই। প্রতিপক্ষের খেলোয়ারদের সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য নেয়া
থেকে শুরু করে বিভিন্ন রেসে এনার্জি লেভেল চেক করার কাজেও বিগ ডাটা ব্যবহার করা
হয়।
টেকনোলজির সাথে বিগ ডাটাকে নতুন করে পরিচয় করিয়ে দেবার মতো কিছু নেই। ফেসবুক, গুগল ও আমাজনের মতো জায়ান্ট টেক প্রতিষ্ঠানগুলো ইতিমধ্যে বিগ ডাটাকে কাজে লাগিয়ে নতুন নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছে। এদের সার্ভারে প্রতিদিন বিলিয়ন বিলিয়ন ডেটা জমা হচ্ছে এবং এতসব তথ্যের মধ্যেও কাঙ্ক্ষিত তথ্য খুঁজে পেতে মাত্র কয়েক সেকেন্ড সময় লাগে যা কেবল মাত্র বিগ ডাটার কারণেই সম্ভব হয়েছে। ফেইস রিকগনিশন, ভয়েস রিকগনিশন, ভয়েস সার্চ, ফিঙ্গারপ্রিন্ট আর ও কত কি। অনেক তো হলো, এতক্ষণে নিশ্চইয় আমরা বুঝে গিয়েছি বিগ ডাটা কিভাবে আমাদের জীবনকে রাতারাতি চেঞ্জ করে দিতে পারে এবং দিচ্ছে, আপনি যদি ডাটা ভালোবাসেন, তবে বিগ ডাটা আপনার জন্য। আগামী বিশ্ব।
০ টি মন্তব্য