রাশিয়ান মহাকাশযান 'লুনা ২৫'-এর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে চাঁদের পৃষ্ঠে বিধ্বস্ত হওয়ার পর ভারতীয় মহাকাশযান চন্দ্রযান-৩ চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে অবতরণ করবে। 

যদি বুধবারের (২৩ আগস্ট) মিশন সফল হয়, তাহলে ভারত প্রথম দেশ হিসেবে চাঁদের ওই অংশে রোভার পাঠানোর ইতিহাস তৈরি করবে।  

ভারত কেন চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে অবতরণ করতে চায় তা নিয়ে অনেক প্রশ্ন উঠেছে। চন্দ্রযান-৩ ইতিমধ্যেই  চাঁদের আবছায়া ওই অংশে অবতরণের চেষ্টা করছে। অবতরণের সময় দুর্ঘটনা এড়াতে উপযুক্ত জায়গা খুঁজছেন। কারণ চাঁদের ওই অংশটি ছায়ায় ঢাকা এবং গর্তে পূর্ণ। আর সব ব্যবস্থাই নষ্ট হয়ে যেতে পারে এদিক-সেদিক হলেই।

ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরোর-এর প্রাক্তন কর্মকর্তা সুরেশ নায়েক হিন্দুস্তান টাইমসকে বলেছেন, ইসরোর প্রতিটি মিশনে ভিন্ন কিছু করার চেষ্টা করে। তাই এবারের চন্দ্র অভিযানের থিম এটি। দ্বিতীয়টি হল চাঁদে পর্যাপ্ত পানির উৎস খুঁজে বের করা। 

তার মতে, চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে খুব গভীর গর্তের কারণে সম্পূর্ণ ছায়াময় এলাকা রয়েছে। সেইসঙ্গে চন্দ্রপৃষ্ঠে ক্রমাগত ধূমকেতু এবং গ্রহাণুর বর্ষণ হচ্ছে। মহাজাগতিক এই বস্তুগুলো যখন চন্দ্রপৃষ্ঠে বিধ্বস্ত হয়, তখন আইস ও ‘মিসিং পার্টিকল’ অপসারিত হয়।

চাঁদের ওই অংশে পানির সন্ধান পাওয়ার আশায় সুরেশ নায়েক বলেন, জমাট বরফে প্রচুর পানি থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে। আরেকটি কারণ হল এর অনন্য টপোগ্রাফি বা বৈশিষ্ট্যগুলি বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব করে তুলতে পারে। একদিকে প্রশস্ত ছায়াময় এলাকা, অন্যদিকে রয়েছে অনেক চূড়া। আর এই চূড়াগুলো সবসময় সূর্যের আলোর নিচে থাকে।

অতএব, চাঁদের দক্ষিণ মেরু অদূর ভবিষ্যতে সেখানে মানুষের বসতি স্থাপনের জন্য একটি অনুকূল স্থান। চীন ২০৩০ সালের মধ্যে সেখানে মানব বসতি স্থাপনের পরিকল্পনা করছে। উপরন্তু, চাঁদে অনেক মূল্যবান খনিজ পাওয়া যায়। তার মধ্যে একটি হল হিলিয়াম-৩, যা আমাদের দূষণমুক্ত বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে সাহায্য করতে পারে।