স্টার্টআপ সংস্কৃতির বিকাশ ও তরুণদের উদ্যোক্তা হতে সহায়তা করতে দেশের দশটি বিশ্ববিদ্যালয়ে চালু হচ্ছে ইউনিভার্সিটি ইনোভেশন হাব। বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের অধীন ‘ডিজিটাল উদ্যোক্তা ও উদ্ভাবন ইকোসিস্টেম উন্নয়ন’ প্রকল্পের (ডিড) আওতায় ‘স্মার্ট ইউনিবেটর’ শীর্ষক এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে তিনটি ইনোভেশন হাব আগামী বুধবার উদ্বোধন এবং আরও সাতটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একই অনুষ্ঠানে শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং ও ইনকিউবেশন সেন্টার স্থাপন (৮ জেলায়) প্রকল্পের আওতায় সাতটি জেলায় (নাটোর, কুমিল্লা, নেত্রকোণা, সিলেট, মাগুরা, চট্টগ্রাম ও রংপুর) শেখ কামাল শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং এন্ড ইনকিউবেশন সেন্টার এর শুভ উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী। এর আগে গত ১২ ডিসেম্বর ২০২২ তারিখ ডিজিটাল বাংলাদেশ দিবসে একই প্রকল্পের আওতায় বরিশালে শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং এন্ড ইনকিউবেশন সেন্টার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্বোধন করেন। এছাড়াও ‘শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং এন্ড ইনকিউবেশন সেন্টার (১৪ জেলায়)’ প্রকল্পের আওতায় ঢাকা (নবাবগঞ্জ) ও টাংগাইলে এবং ‘শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং এন্ড ইনকিউবেশন সেন্টার (১১ জেলায়)’ প্রকল্পের আওতায় কুষ্টিয়ায় ওইদিন ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন প্রধানমন্ত্রী।
আরও যে সাতটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ইউনিভার্সিটি ইনোভেশন হাবের নির্মাণ কাজ শুরু হচ্ছে সেগুলো হলো: বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট); বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, গোপালগঞ্জ; বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহ; বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী; ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি; খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় এবং শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেট। এসব স্থাপনার উদ্বোধন উপলক্ষ্যে আইসিটি বিভাগের আওতায় জোর প্রস্তুতি নিচ্ছে বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ।
বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (গ্রেড-১) জি এস এম জাফরউল্লাহ এনডিসি বলেন, বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ইতোমধ্যে চুয়েট এবং কুয়েটে স্থাপিত আইটি বিজনেস ইনকিউবেটরসহ মোট ১১টি পার্কে কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এছাড়া আমাদের চালুকৃত সকল পার্কে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে স্টার্ট-আপ ফ্লোরের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। ডিড প্রকল্পের মাধ্যমে ১০টি বিশ্ববিদ্যালয়ে ইনোভেশন হাব স্থাপন করা হচ্ছে এবং উদ্যোক্তা হতে আগ্রহীদের প্রশিক্ষিত করার জন্য স্টার্টআপ স্কেল-আপ প্রোগ্রাম শুরু করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণালব্ধ জ্ঞানের বাস্তবিক প্রয়োগে ইন্ডাস্ট্রি ও একাডেমিয়ার সংযোগ স্থাপনে বড় ভূমিকা রাখবে ইনোভেশন হাব। আমাদের শিক্ষার্থীদের জন্য ইনোভেশন হাবের মাধ্যমে যেসব সুবিধা সৃষ্টি করা হয়েছে তাতে এখান থেকেই ফেসবুক-গুগলের মতো বড় বড় প্রোডাক্ট বেরিয়ে আসবে বলে আমরা আশাবাদী।
দেশে ইনোভেশন ইকোসিস্টেম গড়ে তোলার মাধ্যমে বেসরকারি বিনিয়োগের গতি বৃদ্ধি করতে ডিজিটাল উদ্যোক্তা তৈরি করছে বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ। ফলে তরুণ প্রজন্ম চাকুরি খোঁজার পরিবর্তে চাকুরি সৃষ্টির প্রতি অধিক মনযোগী হচ্ছে। অথচ ১৩ বছর আগে দেশের স্বল্প শিক্ষিত তরুণ প্রজন্ম কর্মসংস্থানের জন্য গার্মেন্টসসহ অন্যান্য শ্রমনির্ভর শিল্পের উপর নির্ভরশীল ছিলো। বর্তমানে তারা আইটি শিল্পে নিজেদের ক্যারিয়ার গড়ে তুলছে। এছাড়া স্টার্টআপ এবং ক্ষুদ্র ও মাঝারি প্রতিষ্ঠানগুলোর ইন্ডাস্ট্রিতে প্রবেশের হার বাড়ানো এবং জেন্ডার ইনক্লুসিভ ডিজিটাল এন্টারপ্রেনারশিপ তৈরি করা সরকারের অন্যতম লক্ষ্য। এজন্য বিশ্ববিদ্যালয় ইনোভেশন হাবগুলি উদ্ভাবন সংস্কৃতির চর্চা, উদ্যোক্তামূলক মানসিকতার বিকাশ ও সহযোগিতামূলক পরিবেশের প্রসারের লক্ষ্যে কাজ করছে বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ।
০ টি মন্তব্য