https://gocon.live/

প্রযুক্তি

সরকারের তৈরি অকেজো অ্যাপ এবং প্রাসঙ্গিক কিছুকথা

সরকারের তৈরি অকেজো অ্যাপ এবং প্রাসঙ্গিক কিছুকথা সরকারের তৈরি অকেজো অ্যাপ এবং প্রাসঙ্গিক কিছুকথা
 

সরকারের তৈরি অকেজো অ্যাপ এবং প্রাসঙ্গিক কিছুকথা


সরকারি বা বেসরকারি যেকোনো কাজ শুরু করার পরিকল্পনা গ্রহণ করার আগে অবশ্যই এর উপযোগিতা, প্রয়োজনীয়তা ও সম্ভাব্যতা যাচাই বাছাই করা অপরিহার্য। কিন্তু বিস্ময়কর হলেও সত্য, আমাদের দেশের সরকারের নীতিনির্ধারণী মহল কখনই কোনো কাজের পরিকল্পনা গ্রহণ করার সময় এর সম্ভাব্যতা যাচাই-বাছাই করার প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করে না। পরিকল্পনা করে না প্রকল্পের ব্যয় নির্বাহের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থের সংস্থান হবে কীভাবে, কীভাবে বাস্তবায়ন করা হবে, তেমনিই পরিকল্পনা করা হয় না এর সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনাটা কেমন হবে, কাদের জন্য এ প্রকল্প।


দেখা যায়, আমাদের দেশে কোনো কোনো প্রকল্প গ্রহণ করা হয় স্বার্থান্বেষী মহলের প্ররোচণায়, যার প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে সর্বসাধারণের মনে সব সময় প্রশ্ন থেকে যায়। মূলত স্বার্থান্বেষী মহলের কারণে সরকারের টাকা আমরা এমন অনেক জায়গায় খরচ করি, যা আসলে আমাদের কোনো কাজে আসে না কিংবা তা সাধারণ মানুষের স্বার্থের অনুকূলে যায় না। সেখানে শুধুটাকা ঢালার উৎসবটাই চলে। ফলে সম্পদের অভাবের মধ্য দিয়ে চলা আমাদের এই দেশটির ওপর অহেতুক আর্থিক চাপ বাড়ে, যা হওয়ার কথা ছিল না। এর জন্য সবার আগে যে কারণটা আসে তা হলো সুষ্ঠুপরিকল্পনার অভাব।


এর প্রকৃষ্ট উদাহরণ, সরকারের উদ্যোগে তৈরি ৫০০ অ্যাপ সাধারণ মানুষের কোনো কাজে আসছে না। এই অ্যাপগুলো কাজে না


আসার কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে, এসব অ্যাপ গুগলের অ্যাপ স্টোরে নেই। আইসিটি বিভাগের ওয়েবসাইটে থাকলেও স্মার্টফোনে এগুলো ডাউনলোড করে ব্যবহার করা খুবই জটিল। এ ছাড়া এসব অ্যাপ ব্যবহারে সাধারণ মানুষকে আগ্রহী করে তোলার ব্যাপারে কোনো ধরনের প্রচার নেই।


দুই বছর আগে অর্থাৎ ২০১৫ সালে অনেক ঢাকঢোল পিটিয়ে সরকারের আইসিটি বিভাগ সাড়ে ৯ কোটি টাকা খরচ করে ৫০০ মোবাইল অ্যাপ তৈরি করে। সে সময় আইসিটি বিভাগের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, এসব অ্যাপ বাংলাদেশে ডিজিটাল বিপ্লব আনবে। কিন্তু কার্যত সে বিপ্লবটি আর ঘটেনি। আরও বলা হয়েছিল, স্মার্টফোনে সাধারণ মানুষের ব্যবহারের জন্য বাংলা ভাষায় তথ্যভাণ্ডার তৈরি হবে। যেখানে অ্যাপগুলো কার্যত অকেজো হয়ে পড়েছে, সেহেতুবাংলা ভাষায় সেই তথ্যভাণ্ডার কতটুকুগড়ে উঠল বা উঠল না, সে প্রশ্ন নিয়ে মাথা ঘামানো অবান্তর।


আইসিটি বিভাগের সিনিয়র সিস্টেম অ্যানালিস্ট এবং লানির্ং অ্যান্ড আনির্ং ডেভেলপমেন্ট প্রো গ্রা মের পক্ষ থেকে বলা হয়, প্রা থমিক পর্যা য়ে মানুেষর মাঝে সচেতনতা সৃিষ্ট ও দক্ষ অ্যাপ তৈরির লক্ষ্যে এসব অ্যাপ তৈরি করা হয়েছিল। এ জন্য বাংলাদেশ সরকার গত মে মাসে যক্তু রাজ্য থেকে ‘গ্লোবাল মোবাইল গভ. অ্যাওয়ার্ড’ পেয়েছে। অ্যাপগুলোর আরও উন্নয়নের জন্য এগুলো অন্যত্র  সনাক্ত করা হয়েছে।


এই ৫০০ অ্যাপ উদ্বোধনের সময় বলা হয়েছিল, অ্যাপগুলো আইসিটি বিভাগের ওয়েবসাইটে ও গুগল প্লেস্টোরে রাখা হবে। সেখান থেকে তা বিনামূেল্য ডাউনলোড করে ব্যবহার করা যাবে। ২০১৬ সালের এপ্রিল পর্যন্ত। ৯ মাস অ্যাপগুলো গুগল প্লেস্টোরে ছিল বলে নির্মাতা প্রতিষ্ঠান জানিয়েছে। এরপর সেখান থেকে অ্যাপগুলো সরিয়ে ফেলে গুগল। এখন শুধুআইসিটি বিভাগের ওয়েবসাইটে অ্যাপগুলো রয়েছে।


সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ব্যবহার নীতিমালা পরিবর্তনের কারণে গুগল প্লেস্টোর থেকে এসব অ্যাপ সরিয়ে ফেলা হয়েছে। কেননা, বাইরের ওয়েবসাইটে থাকা অ্যাপ অ্যান্ড্রয়িড স্মার্টফোনে চালানো হলে এর নিরাপত্তা সম্পর্কে নিশ্চিত হতে পারে না গুগল। এগুলো আবার প্লেস্টোরে রাখতে হলে বাংলাদেশ সরকার ও গুগলের মধ্যে সমঝোতা দরকার।


সাধারণ মানুষের কথা মনে রেখেই কোটি কোটি টাকা খরচ করে এসব অ্যাপ তৈরি করা হয়েছে। অতএব এ ব্যাপারে বিদ্যমান বাধা অপসারণে একটা উপায় খুঁজে বের করতেই হবে। এর অন্যথা হলে শুধু শত শত কোটি টাকার অপচয় হবে তা নয়, বরং লার্নিং অ্যান্ড আর্নিং ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রামও ব্যর্থ হয়ে যাবে।








০ টি মন্তব্য



মতামত দিন

আপনি লগ ইন অবস্থায় নেই।
আপনার মতামতটি দেওয়ার জন্য লগ ইন করুন। যদি রেজিষ্ট্রেশন করা না থাকে প্রথমে রেজিষ্ট্রেশন করুন।







পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন? পুনরায় রিসেট করুন






রিভিউ

আপনি লগ ইন অবস্থায় নেই।
আপনার রিভিউ দেওয়ার জন্য লগ ইন করুন। যদি রেজিষ্ট্রেশন করা না থাকে প্রথমে রেজিষ্ট্রেশন করুন।